কলকাতাদেশরাজ্যসর্বশেষ

আজ বাইশে শ্রাবণে কবিস্মরণ

আজ বাইশে শ্রাবণ। বাঙালির কাছে এই দিনটির মাহাত্ম্য মহার্ঘ। কবিগুরুর মহাপ্রয়াণ দিবস। ১৯৪১ সালে বাইশে শ্রাবণ কঠিন দুরারোগ্য ব্যাধিতে কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন আজকের দিনে। কবি, ঔপন্যাসিক, রচনাকার, গল্পকার, দার্শনিক, সঙ্গীতকার এইসব রকমের প্রতিভা বর্তমান ছিল রবীন্দ্রনাথের মধ্যে। এমন কোন মানবিক আবেগ নেই, যাকে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি স্পর্শ করে না।

বাংলা ও বাঙালির গর্বের রবি ঠাকুরের আজ ৭৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি কোনো বিশেষণেই বর্ণনা করা যায় না। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলির জন্য নোবেল পুরস্কার বাঙালিকে পৌঁছে দেয় বিশ্বের দরবারে। সাহিত্যের নতুন দিগন্ত খুলে যায়। বাংলা সাহিত্যের সাথে বিশ্ববাসীর পরিচয় হয় রবীন্দ্রনাথের (Rabindranath Tagore) হাত ধরে।

প্রায় দুই হাজারের মতো গান রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টি করেছেন যা সংগীতের অন্যধারা তৈরি করেছে। ১০০ উপন্যাস, ছোটগল্প, রচনা, নৃত্যনাট্য, ভ্রমণকাহিনী বাংলা সাহিত্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। উল্লেখযোগ্য রচনা গুলোর মধ্যে গোরা, রক্তকরবী, ঘরে-বাইরে, শেষের কবিতা, তাসের দেশ, দেনা-পাওনা, সঞ্চয়িতা তার সেরা কাজগুলোর মধ‍্যে নজরকাড়া উদাহরণ। যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ভাষায় রূপান্তরিত করা হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের রচনায় “জন গন মন অধিনায়ক জয় হে” ও “আমার সোনার বাংলা” আজও ভারত-বাংলাদেশকে এক বন্ধনে বেঁধে রেখেছে। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বিভিন্ন সাহিত্যিক তাদের লেখায় লিখে গেছেন রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির কোন বন্ধন নেই। সর্বজনগ্রাহ্য তাঁর সমস্ত সৃষ্টি। বাংলা সাহিত্যের এক মাইলস্টোন রবীন্দ্র-রচনাবলী।

রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য স্রষ্টার পাশাপাশি দেশপ্রেমী ছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। জালিয়ান ওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ইংরেজদের দেওয়া নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন রচনা করেছিলেন অনায়াসে। অসংখ্য দেশাত্মবোধক গান, কবিতা রচনা করেছিলেন।

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী রবি ঠাকুর বারবার উঠে এসেছেন বিভিন্ন সাহিত্যিকদের লেখায়। আজও তাঁর মৃত্যুদিনে অসংখ্য ফেসবুক পোস্ট ও সংবাদপত্রের কলাম ভরে গিয়েছে তাঁর স্মৃতি-স্মরণে। যতদিন বাঙালি স্বত্তা বেঁচে থাকবে, ততদিন‌ রবিঠাকুর থেকে যাবেন বাঙালির আবেগ, চিন্তন ও মননে।