অর্থকষ্টে গাড়ি পরিষ্কার করেও সিবিএসসি তে 92% নম্বর !
আমরা প্রতিনিয়ত দেখে এসেছি, প্রবল ইচ্ছা থাকলে যে কোন মানুষ যেকোনো কিছু লাভ করতে সক্ষম হয়। আর ভালো কৃতকার্যের দরুন সে সাফল্যের পাহাড়ে আরোহণ করে। ঠিক আবারো আমরা এর প্রমাণ পেলাম।
দিল্লিতে বসবাসকারী দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র এরকম একটা অসাধ্য সাধন করে দেখিয়ে দিলো। ছাত্রটির নাম পরমেশ্বর। বাড়িতে অর্থকষ্ট থাকায় সকাল 4 টায় উঠে তাকে গাড়ি পরিষ্কার করতে হতো। কারণ তা না হলে সে স্কুলের ফি দিতে পারছিল না। কিন্তু এত অর্থকষ্ট সে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছে। সে চ্যালেঞ্জ ও জয় লাভ করেছে। আর এইভাবে সে দ্বাদশ এর বোর্ড পরীক্ষা সিবিএসসি- CBSE-তে 92 শতাংশের মতো দারুন একটা নম্বর পেতে সক্ষম হয়েছে।
পরমেশ্বর নিজেই সবকিছু ব্যক্ত করেছে। সে বলেছে, তাকে সকাল চারটেয় উঠতে হতো। এরপর তাকে আড়াই কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গাড়ি পরিষ্কার করার কাজটি করতে যেতে হতো। প্রত্যেকদিন সে আটটি থেকে দশটি গাড়ি সাফ করত। আর এইভাবে সে সপ্তাহের ছয় দিনে প্রত্যেক দিন 6 ঘন্টা করে পরিশ্রম করত। আরে সে মজুরি হিসেবে পেতে মাত্র 3000 টাকা। আর এই ভাবেই সে তার পরিবারের লোকজন এবং স্কুলের খরচ চালাচ্ছিল।
সে আরো বলেছে, দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই এই কাজ শুরু করেছে সে। কিন্তু অনেকে আছে যারা কাজ করে সেই টাকা ফুর্তি করে নষ্ট করে দেয়। পরমেশ্বর এই পথে হাঁটেনি। সে পুরো উপার্জিত টাকা টি তার পরিবার এবং পড়াশোনার কাজে লাগিয়েছে।
তাছাড়া এত ভোরে দিল্লিতে প্রচন্ড শীত থাকতো। ফলে সকাল চারটেতে এত ঠান্ডায় গাড়ি পরিষ্কার করা খুব দুঃসহ ছিল। কারণ ওই সময় জলে হাত দিলে হাত বরফের মতো শীতল হয়ে যেত। এমনকি লোকজন তাকে বকাঝকাও করেছে সে সময়।
জানা গেল, পরমেশ্বর পিতা হার্টের রোগে অসুস্থ হয়ে রয়েছেন। ফলে তিনি স্বাভাবিক ভাবেই কোন প্রকার পরিশ্রম করতে পারেন না। তার দাদার ও সেরকম শক্ত কোন জীবিকার উপায় নেই। পরমেশ্বর ব্যক্ত করেছে যে মার্চ মাসে তার বাবার হার্টের অপারেশন করা হয়। আর সে সময় থেকেই সে হাসপাতাল থেকেই পড়ালেখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অপরপক্ষে দিল্লির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তার পড়ালেখার কাজে সহায়তা করে চলেছে।
স্বপ্ন
পরমেশ্বরের ইচ্ছা দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। এরই মধ্যে সে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম তুলে আবেদন করে দিয়েছে। তার ভবিষ্যতের স্বপ্ন শিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। নিজে পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ভবিষ্যতের প্রজন্মকে যথাযথ উপায়ে শিক্ষা প্রদান করতে চায় সে।