দেশবিনোদনভাইরালসর্বশেষ

ইডির দপ্তরে টানা জেরা রিয়া চক্রবর্তী‌র, উঠে এল নয়া তথ‍্য

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন সুশান্তের প্রাক্তন বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। কিন্তু ইডির তরফের তা নাকচ করা হয়। ৭ আগস্ট পূর্বনির্ধারিত সময়ে ভাই সৌভিক চক্রবর্তীকে নিয়ে ইডির অফিসে হাজিরা দেন রিয়া চক্রবর্তী।

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর রহস্যের সাথে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় রিয়া চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এদিন। রিয়া চক্রবর্তীর আগে সুশান্তের চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং অভিনেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুঁটিয়ে দেখা হয় ‌ইডির তরফে।

৭ আগস্ট দুপুর আড়াইটে নাগাদ সুশান্তের প্রাক্তন বিজনেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদীকেও তলব করা হয় ইডির পক্ষ থেকে। সুশান্তের এই বিজনেস ম্যানেজারকে নিয়োগ করেছিলেন রিয়া নিজে। এদিন রিয়ার ফোনের কললিস্ট ঘেঁটে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে ইডি। গত ছয়মাসে রিয়ার তরফ থেকে ৩০০ বারের বেশি ফোন গিয়েছে মহেশ ভট্টের কাছে। এবং ৮০০ বার তার কথা হয়েছে সুশান্তর প্রাক্তন বিজনেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদির সাথে। সুশান্তের বাড়ির ম্যানেজার স‍্যামুয়েল মিরান্ডার নিয়োগ করেছিলেন রিয়া। তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে রিয়ার কললিস্টে।

মুম্বাই পুলিশ এর তরফে জানানো হয়েছে ১৪ জুনের পরে স‍্যামুয়েলের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে সুশান্তের বন্ধু স্মিতা পারেখ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রিয়ার বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন রিয়া সুশান্তের ফোনটি ব্যবহার করতেন এবং পরিচিতদের নম্বর না থাকা একটি ফোন সুশান্ত‌কে ব‍্যবহার করতে দিয়েছিলেন। বিজেপি নেতা আশিষ সেলার এদিন সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, সুশান্তের মনোরোগ বিশেষজ্ঞকেও জেরা করা উচিত। তার মতে তিনিও কোন সত্য লুকিয়ে যাচ্ছেন।

ইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুশান্তের মোট চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং সন্দেহ করা হচ্ছে তার মধ্যে দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে রিয়া চক্রবর্তীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন হয়েছে। সন্দেহ দানা বেঁধেছে একটি বিষয়, যেখানে রিয়া চক্রবর্তী তাঁর বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১৪ লক্ষ টাকা, সেখানে মুম্বাইতে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি কিভাবে কেনা সম্ভব? তার কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হবে ইডির তরফের।

অন‍্যদিকে রিয়া চক্রবর্তী‌র বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সুশান্তের মৃত্যুর পর তার ইমেইল ব্যবহার করেছে‌ন রিয়া। পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করেছেন। ব্যাঙ্কের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিও মুছে দেওয়া হয়েছে ইমেইল থেকে। বহুদিন ধরেই সুশান্তের অনুরাগী‌দের তরফে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। সুশান্তের মৃত্যুর পর‌ও তার সোশ‍্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে সক্রিয় থাকার ঘটনা নজরে আসে অনুরাগী‌দের। এরমধ‍্যেই সুশান্তের ব‍্যক্তিগত ডায়েরির ছেঁড়া পাতা নিয়ে‌ই রহস‍্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেখা গিয়েছে সুশান্তের ডায়েরির মাঝের কিছু অংশের পাতা ছেঁড়া। তা নিয়েই সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে তদন্ত‌কারীদের মধ‍্যে।

রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানসী তরফে ইডির জিজ্ঞাসাবাদ স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এবং সুশান্তের বাবার করা মামলা যাতে পাটনা থেকে মুম্বাইতে স্থানান্তরিত করা হয় তার জন্য তিনি শীর্ষ আদালতে আবেদন জানান‌। আগামী সপ্তাহে সেই মামলার শুনানি হবে।

১৪ জুন সুশান্ত মৃত্যুর পর থেকেই তদন্ত চালানো হচ্ছে মুম্বাই পুলিশের তরফ থেকে। এখনো পর্যন্ত ৫৬ জনকে জেরা করা হয়েছে কিন্তু কোনো সন্দেহজনক তথ্য এখনো উঠে আসেনি বলেই দাবি ছিল মুম্বাই পুলিশের।কিন্তু সুশান্ত সিং রাজপুতের বাবার করা নতুন করে এফআইআরের পর বিহার পুলিশের তরফে নানা নতুন তথ্য উঠে আসছে। যা নিয়ে ক্রমশ জলঘোলা হয়ে চলেছে সুশান্ত মৃত্যু তদন্ত কাণ্ডে। ইডি ও সিবিআই-এর যৌথ তদন্তে কোন অমোঘ সত‍্য উঠে আসে তা নিয়ে সরগরম সুশান্তের অনুরাগী‌মহল।