আজ 24 শে জুলাই মহানায়ক উত্তম কুমারের মহাপ্রয়াণ দিবস।
চলুন আজকে আমরা জেনে নেব মহানায়ক উত্তম কুমার- Uttam Kumar সম্পর্কিত কয়েকটি মূল্যবান তথ্য। উত্তম কুমারের প্রকৃত নাম ছিল অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। তিনি ব্রিটিশ শাসিত ভারতে 1926 সালের সেপ্টেম্বরের 3 তারিখে কলকাতার আহিরীটোলা তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে ভারতের বাংলা সিনেমার অভিনেতা, প্রডিউসার এবং পরিচালক। তিনি শুধুমাত্র টিভি পর্দাতেই নয় তিনি থিয়েটার বা মঞ্চ দারুণ দারুণ সব অভিনয় আমাদেরকে উপহার দিয়ে গেছেন।
পড়াশোনা
উত্তম কুমার কলকাতার সাউথ সাবারবান স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। পরবর্তীকালে গোয়েনকা কলেজে অ্যাডমিশন নিলেও গ্রাজুয়েশন শেষ করতে পারেননি। তিনি কলকাতার পোর্টে কর্মজীবন শুরু করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ছিলেন। আর সেখান থেকে উঠে এসে তাকে চলচ্চিত্র জগতে নাম করতে কঠিন অধ্যবসায় করতে হয়েছিল।
কর্মজীবন
সর্বপ্রথম উত্তম কুমার মায়াডোর নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন কিন্তু কোনো কারণবশত সেই সিনেমাটি কে হলে রিলিজ করা হয়নি। তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল দৃষ্টিদান। বসু পরিবার সিনেমা করার পর সাড়ে চুয়াত্তর সিনেমা করার পর তিনি বাংলা চলচ্চিত্র এক সাড়া ফেলে দেন। আর এই মুভিতে তার নায়িকা হিসেবে ছিলেন সুচিত্রা সেন। আর এই সিনেমার মাধ্যমেই বাংলা সিনেমায় সবথেকে সফল এবং জনপ্রিয় উত্তম-সুচিত্রা জুটির শুরু হয়।
এরপর এই উত্তম-সুচিত্রা জুটি 50 এবং 60 এর দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে হারানো সুর, পথে হল দেরি, সপ্তপদী, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, জীবন তৃষ্ণা এবং সাগরিকা এই মুভিগুলো করে প্রশংসা লাভ করেন। এছাড়া এই ছবিগুলো বক্সঅফিসের লক্ষ্মী ও এনে দিয়েছিল।
এছাড়াও তিনি ছোটিসি মুলাকাত, অমানুষ এবং আনন্দ আশ্রম নামে আরো কতকগুলি হিন্দি সিনেমা তে কাজ করেছিলেন।
ব্যতিক্রমী নায়ক
উত্তম কুমার শুধুমাত্র রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করেননি। তিনি শুধুমাত্র তথাকথিত সুপারহিরো ছিলেনই নয়। তিনি মূলত ছিলেন এক চরিত্র অভিনেতা। তিনি বিভিন্ন ধরনের ভার্সেটাইল বা আলাদা আলাদা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
পরিচালক হিসেবে
উত্তম কুমার পরিচালক হিসেবেও যথেষ্ট নাম করেছিলেন।তিনি কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী(১৯৮১),বনপলাশীর পদাবলী(১৯৭৩) এবং শুধু একটি বছর (১৯৬৬) ছবিতে পরিচালনার দায়িত্ব সম্পন্ন করেন। আর এগুলি দর্শকের প্রশংসা লাভ করেছিল।
ব্যক্তিগত জীবন
তিনজন সন্তানের মধ্যে উত্তম কুমার ছিলেন জ্যেষ্ঠ। তার পিতার নাম সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায় এবং মা চপলা দেবী।উত্তম কুমার গৌরী দেবী সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।তাদের একটি ছেলে হয় নাম গৌতম চট্টোপাধ্যায় যিনি ক্যান্সার রোগের আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর 1963 সালে বিশেষ কারণবশত গৌরির সঙ্গে উত্তম কুমারের ছাড়াছাড়ি হয়।এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে উত্তম কুমার বসবাস করেন।
মৃত্যু
জুলাই মাসের 24 তারিখে ১৯৮০ সালে মাত্র 53 বছর বয়সে উত্তম কুমার মৃত্যুবরণ করেন। এত দীর্ঘকাল পরেও তার অভিনয় প্রতিভা আমাদের প্রত্যেকের মনে সজীব। তিনি আমাদের মনে সারা জীবন বেঁচে থাকবেন।