স্ট্রোক দিবসে জেনে নিন স্ট্রোক এড়ানোর উপায়
মানুষের জীবনে সবথেকে মারণ রোগ কিন্তু ক্যান্সার নয়, ক্যান্সারের সাথে তো কোনভাবেই লড়া যায় কিন্তু কোন মানুষের যদি স্ট্রোক হয়, তাহলে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে একেবারেই সম্ভব নয়। কোন মানুষের যদি স্ট্রোক হয়, তাহলে তিনি হয় শারীরিকভাবে পঙ্গু হয়ে থাকবেন সারাটা জীবন। না হলে তার মৃত্যু অনিবার্য। সবথেকে ক্ষতিকারক দিকটি হলো, কোনরকম আভাস ছাড়াই হঠাৎ করে হতে পারে স্ট্রোক। (365 Reporter Bangla Health Tips : how to reduce the chances of stroke)
প্রতিবছর ২৯ শে অক্টোবর বিশ্ব জুড়ে স্ট্রোক দিবস পালন করা হয়। এইদিন প্রত্যেকটি মানুষকে স্ট্রোক এড়ানোর জন্য বাড়তি কিছু সচেতনতা প্রদান করা হয় ডাক্তারদের তরফ থেকে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এই দিনটি পালন করা হয়। (International Stroke Day- 29 October every year)
মস্তিষ্কে কোনভাবে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেলে স্ট্রোক হয়। হঠাৎ করে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে যেতে শুরু করে দেয়। এর ফলে সেই মানুষ একেবারেই অসাড় হয়ে পড়েন। দ্রুত যদি চিকিৎসা শুরু না হয়, তাহলে মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়, এবং সাথে সাথে মৃত্যু হয় সেই ব্যক্তির।
কোন ব্যক্তির যদি স্ট্রোক হয়, তাহলে তার মধ্যে নানারকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আপনি যদি সেই উপসর্গগুলি চিনে নিতে পারেন, এবং সেই মত যদি দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন তাহলে বড়সড় কোন ক্ষতি এড়াতে পারবেন আপনি। (Stroke er uposorgo)
বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায় সকল মানুষেরই। তবে এখন স্ট্রোক যেকোনো বয়সেই হতে পারে। কিন্তু কয়েকটি সামান্য সাবধানতা অবলম্বন করলেই এই বিপদ থেকে আপনি রক্ষা পেতে পারেন।১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ (Control The Blood Pressure)
পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে স্ট্রোক হবার অন্যতম একটি বড় কারণ হল উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপ যদি হয়, তাহলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন আচমকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। রক্তচাপ সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, ধূমপান, নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। তার সঙ্গে ছাড়তে হবে মদ্যপান অভ্যাস। হাই ব্লাড প্রেশার থাকলে ডাক্তারদের পরামর্শ মতো নিয়মিত আপনাকে ওষুধ খেয়ে যেতে হবে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা (Control your body Weight)
শরীরের ওজন যদি হঠাৎ করে বেড়ে যায় তাহলে আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে বিভিন্ন রকম অসুখ। এই অসুখ গুলির পাশাপাশি আপনার স্ট্রোক হবার আশঙ্কা বেড়ে যায়। আপনি যদি ওভারওয়েট হয়ে থাকেন, তাহলে অবিলম্বে আপনার ওজন কমানোর চেষ্টা করুন। ওজন বেশি থাকলে কিন্তু আপনার জীবনহানি হতে পারে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দিনে অন্ততঃ আধাঘন্টা শরীরচর্চা করতে হবে। সাথী স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া এবং পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরী। সবথেকে বেশি জরুরি জীবনের স্ট্রেস মুক্ত থাকা।
৩. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা (Control Blood Sugar)
হাই ব্লাড প্রেসার এর পাশাপাশি যদি আপনি ডায়াবেটিস রোগী হন, তাহলে আপনার স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে যদি ব্লাড সুগার থাকে, তাহলে আপনার শিরা এবং উপশিরাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। এর ফলে মস্তিষ্কে ঠিকমতো রক্তসঞ্চালন হতে পারে না, ফলে আপনার জীবনে স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে যায়। তাই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনার খুব দরকার নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করা।
৪. ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ (Avoid Drinking Alcohol and Smoking)
নিয়মিত মদ্যপান করলে যে কোন মানুষের পক্ষে যে খারাপ তা সকলেই জানি। মদ্যপানের কারণে কিন্তু ব্লাড সুগার বেড়ে যেতে পারে। সেই কারণে আপনার জন্য মদ্যপান ছাড়া টা খুবই জরুরী। আমি যদি মদ্যপান বর্জন না করতে পারেন,তাহলে অন্তত দিনে একেবারে ন্যূনতম পরিমাণ বেঁধে রাখুন। ধূমপানে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে।
৫. কোন উপসর্গ অপেক্ষা নয় (If You Observe the symptoms of Stroke, Don’t Wait, Consult A doctor)
স্ট্রোকের কারণে বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু হয়। এর অন্যতম কারণ চিকিৎসা শুরু করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। মানুষ প্রথমে বুঝতেই পারেন না যে তার স্ট্রোক হচ্ছে। তাই কখনোই স্ট্রোকের উপসর্গ গুলি কে হালকা ভাবে নেবেন না। অবিলম্বে এই উপসর্গ কে চিনে নিয়ে তার চিকিৎসা শুরু করতে পারলে বড়োসড়ো ক্ষতি এড়ানো সম্ভব। আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আপনার পাশের মানুষটি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। (Kivabe stroke er jhuki komaben ? stroke hole taratari daktar er kache nie jan rugi k)