সর্বশেষস্বাস্থ্য

কোন কোন অসুখে লবঙ্গ উপকারী, জেনে নিন একঝলকে

সর্দি-কাশিতে লবঙ্গ যে উপকারী তা আমরা সকলেই জানি। তবে শুধুমাত্র সর্দি-কাশি ছাড়াও আরো অনেক বহু রোগ নিরাময়ের গুণাবলী আছে লবঙ্গতে। রান্নায় মশলা হিসেবে লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়। গলা খুসখুস করলে বড়রা মুখে লবঙ্গ রাখতে বলেন। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে‌র হলুদ, আদা ও আমলকির মতো লবঙ্গ‌ও উপকারী, জেনে নিন সেগুলি কি কি (Benefits Of Cloves For Preventing Disease)।

অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উৎস:
লবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা ফ্রি-রেডিকলস্ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। লবঙ্গের ইউজেনল নামের উপাদান প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করে

★ ম্যাঙ্গানিজ এর উৎস:

১ চা চামচ বা ৫ গ্রাম লবঙ্গে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন কে-এর পাশাপাশি ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা এবং হাড় সুস্থ ও শক্ত করতে ম্যাঙ্গানিজ খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান। ম্যাঙ্গানিজের একটি উৎকৃষ্ট উৎস হল লবঙ্গ।

★ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ:

লবঙ্গের মধ্যে থাকা নাইজেরিসিন রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলির কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় এবং ইনসুলিন নিঃসরণে সাহায্য করে। এর ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে।

★ অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া উৎপাদন:

লবঙ্গে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্ল‍্যামেটরি উপাদান থাকার জন্য সর্দি কাশির পাশাপাশি দাঁতের বিভিন্ন সমস্যায় লবঙ্গ কার্যকর। নিয়মিত লবঙ্গ‌যুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে দাঁতের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং মাড়ি সুস্থ থাকে।দাঁতকে ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে লবঙ্গ।

★ পাকস্থলীর আলসারে লবঙ্গের ভূমিকা:

জিনগত, সংক্রমণ এবং স্ট্রেস বিভিন্ন কারণের পেপটিক আলসার বা স্টমাক আলসারের মতো সমস্যা হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে লবঙ্গের এসেনশিয়াল অয়েল গ্যাস্ট্রিক মিউকাস উৎপাদনে সাহায্য করে। বিভিন্ন সংক্রমণ বা আলসারের হাত থেকে পাকস্থলীর গায়ের আবরণকে রক্ষা করে।

★ হাড়ের চিকিৎসায় লবঙ্গ:

বয়স্ক‌দের মধ্যে লো-বোন মাস বা অস্টিওপোরেসিসের ঝুঁকি এবং হাড়জনিত যেকোনো সমস্যায় লবঙ্গ খুবই কার্যকর। লবঙ্গের মধ্যে থাকা উপাদানগুলি হাড়ের জোর এবং বোন ডেনসিটি বাড়াতে সাহায্য করে।

● কি কি ভাবে লবঙ্গ খাওয়া যায়:

★ ঠান্ডা লাগলে লবঙ্গ চা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।

★ জলের মধ্যে কয়েকটি লবঙ্গ দিয়ে গার্গল করলে যেকোনো ঠান্ডা লাগার সমস্যা উপশম হয়।

★ গরম জলে ৫ মিনিট লবঙ্গ ফুটিয়ে সেই জল পান করলে উপকার পাওয়া যায়।

★কাঁচা লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে।

★ নুন বা মধুর সঙ্গেও খেতে পারেন লবঙ্গ।

● লবঙ্গ সম্পর্কে সতর্কতাঃ

বিশেষজ্ঞদের মতে যে কোন জিনিসের যেরকম উপকারী দিক রয়েছে। সেরকমই তার অতিরিক্ত ব্যবহারেও ক্ষতিকারক দিক থাকতে পারে। সেরকম অতিরিক্ত ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে লবঙ্গ‌তেও।

★ অনেকেই অকারণে লবঙ্গ রাখতে পছন্দ করেন। কিন্তু অতিরিক্ত লবঙ্গ খাওয়ার ফলে বিষক্রিয়া হওয়ার ভয় থাকে।

★ অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে রক্ত পাতলা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। রক্ত তঞ্চনে বাঁধা দেয়। হিমোফিলিয়া রোগের ক্ষেত্রে আশঙ্কাজনক।

★ যাদের সুগার কমে যাওয়ার সমস্যা আছে। তাদের লবঙ্গ এড়িয়ে চলাই ভালো। লবঙ্গের মধ্যে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তার ফলে লবঙ্গ হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণ হতে পারে।

★ যাদের লবঙ্গে এলার্জি রয়েছে তাদের লবঙ্গ বা লবঙ্গ তেল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

আদা বা হলুদ ইত্যাদির মতোই ভেষজ গুণ রয়েছে লবঙ্গতেও (Herbal virtues Present In Labanga)। সেক্ষেত্রে কোন রোগের ক্ষেত্রে কতটা লবঙ্গ ব্যবহার করা উচিত তা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাই ভালো ।