Kolkata Murder News : গঙ্গার ধারে বাবাকে পুড়িয়ে মারলো মেয়ে, ঘটনায় স্তব্ধ কলকাতা !

Kolkata : জীবনে বাবা-মায়ের জায়গা আমরা অন্য কাউকে দিতে পারিনা। বাবা-মা এমন একজন মানুষ যাদের সবথেকে বেশি সর্বাগ্রে রাখি আমরা। কিন্তু জীবনে কিছু কিছু সময় আমাদের এমন পরিস্থিতির শিকার করে দেয় যে আমাদের না চাইতেও করতে হয় জীবনের সব থেকে বড় অপরাধ। কখনো কখনো আমরা খবরে পড়ি যে বাবা অথবা মা ছেলে মেয়েকে অকথ্য অত্যাচার করে এবং যার ফলে শিশুরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়।আবার অনেক সময় বাবা আমাকে আঘাত করতেও পিছপা হয় না তারা। (Murder News : Daughter Piyali burns her father in Ganges Ghat, Chandpur, Kolkata, West Bengal)

সম্প্রতি এমনই একটি নৃশংস ঘটনা ঘটেছে কলকাতার চাঁদপাল ঘাঁটে। ঘটনাটি শুনলে হয়ত আপনিও চমকে যেতে পারেন। সোমবার ভোরবেলা সেই এলাকার কিছু মানুষ প্রাতঃভ্রমণে আসতে সেখানে পোড়া মাংসের টুকরো দেখতে পান। মাংসপিণ্ডগুলি কিন্তু এক জায়গায় ছিল না, এদিক-ওদিক ছড়ানো-ছিটানো ছিল।

প্রথমে আসল ঘটনাটি কেউ আন্দাজ করতে পারেনি। কি এমন হলো যার ফলে এইভাবে মাংসপিণ্ড এদিক-ওদিক ছড়ানো আছে, তাই নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে চরম শোরগোল দেখা যায়। এর পরে এলাকার কিছু মানুষজন মাংসের টুকরোগুলো দেখে খবর দিয়েছিলেন নর্থপোল থানার পুলিশকে। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে উপস্থিত হন পুলিশের ফোর্স। তদন্তে নেমে যে ঘটনাটি সকলের সামনে উঠে আসে, তা শুনে অথবা দেখে সকলেই চমকে যান।

তদন্তে নেমে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা, জানতে পারে ওই মৃত ব্যক্তি এবং তার মেয়ের সম্পর্কে। তদন্তে নেমে মৃত ব্যক্তির মেয়েকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায় যে মৃত ব্যক্তির নাম ছিল বিশ্বজিৎ আদ্য। তার বাড়ি ক্রিস্টোফার রোডে।

টানা কয়েক ঘণ্টা জেরা করার পর পিয়ালী কে, পুলিশ জানতে পারে যে গত শনিবার রাতে বাবাকে রেস্তোরাঁতে ডিনার করার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছিল পিয়ালী। রেস্তোরাঁতে বেশ অনেকক্ষণ কাটানোর পর বাবাকে নিয়ে মেয়ে নিয়ে যায় পাশের একটি পার্কে। যেখানে বাবাকে মদ্যপান করায় সে। অতিরিক্ত মদ্যপান করার পর তিনি সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েন। তখন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তার নিজের মেয়ে।

কিন্তু কি এমন হয়েছিল যার জন্য এই নিশংস হত্যা করতে হলো পিয়ালী কে? পুলিশের জেরার মুখে পিয়ালী জানান যে, বাবা নিয়মিত মদ্যপান করতেন। তার ওপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করতেন নিয়মিত। এইভাবে বেশ কিছুদিন চলার পর অবশেষে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে পিয়ালী। শেষমেষ থাকতে না পেরে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় সে।

অভিযুক্ত পিয়ালী কে জেরা করাতে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, পিয়ালির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল কিছুদিন আগে। তারপর থেকেই সে থাকে বাপের বাড়িতে। সংসারে ভীষণভাবে আর্থিক অনটন চলছিল। কিন্তু আর্থিক অনটন নাকি শুধুমাত্র মানসিক অত্যাচার, কি কারনে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল সে, তা জানার জন্য আরও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।