বিনোদনসর্বশেষ

সুশান্ত আস্ত ছেলেমানুষ! মাঝে মাঝেই জড়িয়ে ধরতো- বললেন শাশ্বত

জুন মাসের 14 তারিখে 2020 সালে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেছে। আর স্বাভাবিকভাবেই এই দিনটিকে অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় তার জীবন থেকে মুছে ফেলতে চান। আর বুকের মাঝে জমা করতে চান বৃষ্টিস্নাত সেই রাতের সিন। সে রাত্রে সুশান্ত সিং রাজপুতের (Sushant Singh Rajput) সঙ্গে বিয়ার পান করার সাথে সাথে দিল বেচারা সিনেমায় শাশ্বত তার জীবনে কি পেলেন সেগুলো অভিনয় ভঙ্গিমায় বলেছিলেন।

আর তখন অভিনেতা সুশান্ত তাকে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরছেন, আবার মাটিতে হঠাৎ করেই তার সামনে বসে পড়ছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা- Anandabazar Patrika- কে মনের ভেতর থেকেই উচ্চারণ করে ফেললেন ছবির অভিনেত্রী কিজি বসুর পিতা শাশ্বত।এই কিজি বসু চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জনা সংহি- Sanjana Sanghi. তিনি বলেন, আপনারা হয়তো জানেন না যে ও একেবারেই ছেলেমানুষ। মাঝে মাঝে জড়িয়ে ধরতো আমাকে। শুট শেষ হওয়ার পর আমরা গল্প করছি তখন হঠাৎ করে ঠাস করে মাটিতে বসে পরলো। ও যে মুম্বাইয়ের এত বড় একজন স্টার সেসব ওকে সামনে থেকে দেখলে বা মেলামেশা করলে কোনভাবেই মনে হয়নি।

এতোখানি বলার পর শাশ্বত একটু জিরিয়ে নিলেন। তিনি যেন নিজেও পরতে পরতে সুশান্তকে অনুভব করছেন।শাশ্বত-Saswata Chatterjee (सास्वता चेटर्जी) নিজেও শুক্রবারে রাত্রিবেলা পরিবারের সবার সঙ্গে বসে ‘দিল বেচারা’- Dil Bechara উপভোগ করেছেন। ছবিতে দুঃখ-কষ্ট আর মৃত্যুর এরকম কম্বিনেশনে তিনি এক কথায় মুগ্ধ হয়ে গেছেন।

বলেই ফেললেন,”মুকেশের ডিরেকশনে করা প্রথম সিনেমাটির যদি এত সুন্দর হয় তাহলে পরের টা আরো কত খানি না উচ্চতায় উঠবে। উঠতে বসতে শুধু সুশান্তর কথাই মনে বেজে চলেছে। আর কয়েকটা দিন যদি লোকজন ওর মনের কথা বুঝতে পারত। এই যে দিল বেচারা গানটিতে নাচের যে অসাধারণ দৃশ্যপট আর অত বড় লং একটা শট। নিজের কাছে ধারণা হচ্ছে যেন পুরো নাচটা একটা শটেই কমপ্লিট হয়ে গেছে। যা এক কথায় অবিশ্বাস্য। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আমি সর্বপ্রথম ম্যাকাও নামক জায়গার এক পুরস্কার অনুষ্ঠানে ওকে নাচ করতে দেখেছিলাম। আর তখনই বুঝে গিয়েছিলাম অভিনয় আর নৃত্যশৈলী ওর রক্তের মধ্যেই আছে।

তো কি পদ্ধতিতে বিয়ার পান করার ওই সিন ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছিল সে কথার উত্তরও বিস্তারিতভাবে দিলেন শাশ্বত।

বারবার দৃশ্যটির শুটিং করা হয়েছিল। আমরা অবশ্য পূর্বে থেকেই রিহার্সেল করে রেখেছিলাম। এছাড়াও অনেকগুলো অতিরিক্ত দৃশ্য শুট করা হয়েছিল কিন্তু ছবির স্পিড বা যাতে দর্শকের কাছে বোরিং না লাগে সেজন্য সেগুলো বাদ দেয়া হয়েছে। সুশান্ত প্রকৃতপক্ষেই মিষ্টি একটা ছেলে। সব সময় হাসি হাসি মুখ করে থাকছে। আর নিজে থেকেই এগিয়ে এসে সবার সঙ্গে কথা বলছে। আর আড্ডা দেয়ার সময় তো মাটিতে বসবেই। আমরা সবসময় সোফাতে বসতাম‌, আসলে শিক্ষিত ছেলে বলে কথা। ওর নিজের প্রাইভেট কারে গাদা গুচ্ছের বই ছিল। আরে থেকেই বুঝে গিয়েছিলাম ও অভিনেতা থেকেও আরও বড় কিছু। আমাদেরকে সত্যি বোঝার সময় দিল না একটু….”, গলাটা ধরে এল শাশ্বতর।

শাশ্বত আর সুশান্ত শুটিংয়ের সময় একই হোটেলে ছিলেন। তিনি স্মৃতি হাতরে হাতরে বললেন, একদিন খুব ভোরের ঘটনা। বারান্দায় কফি খাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি চারপাশ থেকে একটা বল ডিগবাজি খাচ্ছে। আশ্চর্য ব্যাপার তো?পরে জানা গেল সুশান্ত ইউনিটের কয়েকটা লোককে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে সকাল পাঁচটা থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করে দিয়েছে।
এসব ভাবসাব দেখে স্বস্তিকা- Swastika Mukherjee তো একদিন ম্যানেজারকে নালিশই করে বসলো। কিন্তু সুশান্ত নাছোড়বান্দা। সে স্বস্তিকার কাছে বাচ্চাদের মত ঘ্যান ঘ্যান করতে শুরু করে দিল।ফলে বাধ্য হয়ে স্বস্তিকা সুশান্তকে ক্রিকেট খেলার পারমিশন দিয়ে দিলো।

আর সত্যি কথা বলতে এই মুভিটি তৈরি করার সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল। আর এই পদক্ষেপ গুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে পার করেছিল সুশান্ত।সে অভিনয়ের ক্ষেত্রে একটুও কোথাও খুঁত রাখেনি। প্রচন্ড পরিশ্রমে ছিল সে। বরই পরিশ্রমের কেউ দাম দিল না। আসলে আমাদের এই সিনেমা জগতে কেউ কারো পরিশ্রম দেখেনা,”খানিকটা দুঃখের কথা বলে ফেললেন শাশ্বত।

মূলত সুশান্তর সঙ্গে ফেলে আসা সময় গুলোর স্মৃতিচারণ করেই বুকের মাঝে রেখে দিতে চান শাশ্বত। তবুও গতকালকে দিল বেচারা দেখার পর মন ভারি হয়ে গেছে তার। বারবার শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছে যদি আরো একবার দেখা হতো….

Surajit Joarder

৩৬৫ রিপোর্টার বাংলা ওয়েবসাইট এর অ্যাডমিন। আমি বিনোদন সম্পর্কিত টপিক ভীষণ ভালোবাসি। তাই আমি মেইনলি মুভি, ওয়েব সিরিজ, সিরিয়াল নিয়ে পোস্ট লিখে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *