কলকাতাখবররাজ্যসর্বশেষ

প্রথা ভেঙে ঋতুবতী অবস্থায় পূজা করলেন উষসী, বললেন তার মনের কথা

আস্তে আস্তে কুসংস্কারের বেড়া পেরিয়ে আমরা সকলেই এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। সম্প্রতি কলেজের একজন ছাত্রী তার বাড়িতে সরস্বতী পুজো করেছেন। মহিলা পুরোহিতের সরস্বতী পূজার ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কিন্তু পুজো করার সাথে সাথে তিনি জানিয়েছিলেন যে, পুজো করার সময় তিনি ঋতুমতী ছিলেন। মাসিক চলাকালীন তিনি করেছেন পুজো। একাধারে যেমন এটি একটি দুঃসাহসিক পদক্ষেপ, তেমনি বহু মানুষ রীতিমতো প্রশংসা করেছেন এই তরুণীর। (Kolkata24*7 former reporter Ushasi Chakraborty breaks the barrier and performs Saraswati Puja in ritumati phase – period)

এই প্রসঙ্গে শাস্ত্র বিশারদ নব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন যে, শাস্ত্র তে কোথাও লেখা নেই যে রজস্বলা অবস্থায় মহিলারা পূজা করতে পারবে না। নিজের বাড়িতে শাস্ত্র সম্মতভাবে পুজো করতে পারবে মেয়েরা। (protha venge ritumati mashik cholakalin obosthay Saraswati Pujo korlen Ushasi Chakraborty)

দুইদিন ভাবে বিভৎসভাবে মানুষের কাছে অপমানিত হবার পর অবশেষে তরুণী জানিয়েছেন যে, কোনরকম ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দায় তিনি নিচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন, ভেবে চিন্তেই আমি এই প্রথা ভাঙ্গার কথা ভেবেছি। কোনভাবেই যাতে আমাদের মাসিক চলাকালীন লজ্জা না পেতে হয়, স্যানিটারি প্যাড যেনো লুকিয়ে না রাখতে হয়, তার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া খুব দরকার ছিল। (rojossola abosthay puja)

দীর্ঘদিনের এই বিশ্বাস কেন তিনি ভাঙলেন, এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে,ঋতুবতী অবস্থায় যদি পুজো করা ঘোর পাপ হয়ে থাকে, তাহলে যখন কোন পুরুষ পুরোহিত পুজো করছেন, সাথে সাথে তিনি যদি কোনো পাপ করে থাকেন, তাহলে সেটি কি করে শুদ্ধ হয়ে যায়।

সুচি এবং অশুচি পুরোটাই আমাদের মনের ব্যাপার। শরীরের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। মনের বিশ্বাস নিয়ে যদি পুজো করা যায়, তাহলে সমস্ত পুজো হয় শুদ্ধ। আমি ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে, তাই বহু শাস্ত্রের বই পত্র আমি পড়েছি। কোথাও লেখা নেই যে, ঋতুবতী অবস্থায় পুজো করা যায় না।

রামকৃষ্ণ সারদা মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যাভবোনের শিক্ষিকা রহিনি ধর্মপাল জানিয়েছেন যে, আমাদের ছাত্রীরা জানায় যে, মায়েরা হয়তো কখনো চিরাচরিত চিন্তা ধারা থেকে দূরে সরে যেতে পারবেনা। কিন্তু যখন ছাত্রীরা কোন নিয়ম ভাঙতে চায়, তখন তাদের মায়েরা তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন যে,যদি আমরা ঋতুমতী হওয়ার সময় অন্য সমস্ত কাজ করে যেতে পারি, যদি আমরা ওইদিনই কোন ছুটি না পাই, তাহলে শুধুমাত্র পুজো থেকে আমরা বঞ্চিত থাকবো কেন। নিঃসন্দেহে উষসী চক্রবর্তীর এই পদক্ষেপ বহু মানুষের মনে সাহস যোগায় নতুন করে।